পাকস্থলীর ক্যান্সার-অবহেলা ও অসচেতনতাই যার মূল কারণ
![]()

যে সব ক্যান্সারে মানুষ বেশী আক্রান্ত হয়, তন্মধ্যে পাকস্থলীর ক্যান্সার অন্যতম। প্রাথমিক অবস্থায় হজম ক্রিয়ার গোলযোগ বা পাকাশয়ের প্রান্তভাগে অস্বস্তি অনুভুতি বা Dyspepsia ছাড়া তেমন কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। এর ফলে রোগী তেমন কোনো গুরুত্ব দেন না, অনেকে মনে করেন গ্যাষ্ট্রিক হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খেয়ে অনেকে সাময়িক আরাম অনুভব করেন। এভাবে ক্যান্সার পাকস্থলী থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পরার সুযোগ পায়। এ রোগটি সাধারণত চল্লিশোর্ধ বয়সেই বেশী হয়ে থাকে। নারীদের চেয়ে পুরুষেরা এ রোগে বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
প্রাথমিক অবস্থায় তেমন কোন লক্ষণ না থাকলেও, রোগটি ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায়-
- পেটে ক্ষুধা থাকে, কিন্তু অল্প খেলেই তৃপ্তি চলে আসে অথবা আহারে রুচি থাকে না।
- পেট ফুলে ও ফেঁপে থাকে।
- প্রথমে পানির ন্যায় বমি, পরে টক বমি, থুতুর ন্যায় বমি, দুর্গন্ধযুক্ত বমি হয়। পাকস্থলী ক্যান্সারের রোগ যতই ছড়াতে থাকে, ততই বমি, রক্তবমি, রক্তপায়খানা, ব্যথা, ইত্যাদি হতে থাকে।
- রক্ত শূণ্যতা দেখা যায় ও ফ্যাকাসে বর্ণ ধারণ করে এবং নাড়ির গতি দ্রুত ও দুর্বল হতে থাকে।
- খাদ্য গ্রহনের সময় ওপরে খাদ্যনালীতে ব্যথা অনুভব হয়।
- শরীরের ওজন কমে যাওয়া ও শীর্ণতা পাকস্থলী ক্যান্সারের মূল্যবান লক্ষণ।
যে সমস্ত কারণে পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয় তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
- হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামক এক প্রকার জীবাণুর আক্রমন।
- প্রচুর পরিমানে মদ্যপান।
- যে সমস্ত খাবারে অত্যাধিক লবণ রয়েছে যেমন : কিছু কিছু সামুদ্রিক মাছ, দীর্ঘ দিন যাবৎ সংরক্ষিত টিনজাত খাবার।
- যে সমস্ত খাবারে N-nitrous compounds রয়েছে কিংবা এন্টি অক্সিডেন্ট এর অভাব রয়েছে।
- দ্রুত আহার করা এবং ভালভাবে না চিবিয়ে খাদ্য খাওয়া।
- অনিয়মিত খাদ্য খাওয়া।
- দীর্ঘদিন যাবৎ কোষ্ঠ পরিস্কার না হওয়া।
- ধুমপায়ী লোক এবং যে পরিবেশে ডাস্ট বা ধূলাবালী বেশী সেখানে বসবাসকারীদের মধ্যে এ রোগ হতে পারে। অনেকের মতে, বংশগত কারণেও পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে।
পাকস্থলির ক্যান্সার নির্ণয়ঃ নিম্নোক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পাকস্থলির ক্যান্সার নির্ণয় করা হয়ঃ
- এন্ডোসকপি।
- বায়োপসি।
- ব্যারিয়াম মিল এক্স-রে।
- আল্ট্রাসনোগ্রাম।
- সিটি স্ক্যান।
পাকস্থলী ক্যান্সার প্রতিরোধে কিছু করণীয়ঃ
- পেটে গ্যাস সৃষ্টি করে এমন খাবার খাওয়া যাবে না এবং মাংস, গুরুপাক খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার, উগ্র-মসলাযুক্ত খাবার, বাসি-পঁচা খাবার, অধিক গরম বা অধিক ঠান্ডা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- শুটকি মাছ, লবণ মেশানো মাছ, চা, কফি পান করা যাবে না।
- রোগীর সু-নিদ্রার ব্যবস্থা করতে হবে।
- পায়খানা যাতে নিয়মিতভাবে ও পরিস্কারভাবে হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
- নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা।
- প্রচুর পরিমান ফল ও শাকসবজি খাওয়া।
পাকস্থলী ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ
প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায়,
- অপারেশন বা সার্জারীর মাধ্যমে আক্রান্ত অংশ কেটে ফেলে দেয়া হয়।
- রেডিওথেরাপি
- কেমোথেরাপি।
হোমিওপ্যাথিতে পাকস্থলী ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ
একজন অভিজ্ঞ এবং উচ্চতর ডিগ্রীপ্রাপ্ত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক অবশ্যই ক্যান্সারের স্টেজ, প্রোগ্নোসিস বুঝে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। পাকস্থলীর ক্যান্সারে হোমিওপ্যাথিতে প্রায় ৪০ টির বেশি ওষুধ রয়েছে। রোগীর লক্ষণ ও ক্যান্সারের প্রবলতার উপর নির্ভর করে এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নিয়মনীতি অবলম্বন করে সুনির্দিষ্ট ওষুধ নির্বাচন এবং ওষুধের শক্তি ও মাত্রা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হলে রোগী উপশম লাভ করে এবং অনেক ক্ষেত্রে রোগী স্থায়ীভাবে আরোগ্যলাভ করে থাকে। পাকস্থলীর যে কোন রোগ দেখা দিলেই দেরী না করে একজন উচ্চতর ডিগ্রীপ্রাপ্ত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
[vc_empty_space height="10px"]
For any kinds of physical problem contact with us or visit at our chamber.
[vc_empty_space height="15px"]
+8801816566944